প্রকাশিত: Mon, Apr 1, 2024 11:34 AM আপডেট: Sat, Dec 6, 2025 10:52 AM
[১]ফরিদপুর-যশোর রুটে দ্বিতীয় দিনেও সফলভাবে ট্রেনের ট্রায়াল সম্পন্ন
সনতচক্রবর্ত্তী, ফরিদপুর: [২] পদ্মাসেতু রেলসংযোগ প্রকল্পের আওতায় ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে যশোরের রূপদিয়া পর্যন্ত দ্বিতীয় দিনের মতো ট্রেনের (পরীক্ষামূলক ট্রেন) ট্রায়াল সম্পন্ন হয়েছে।
[৩] রোববার সকাল ৮টা ৪০ মিনিটের দিকে ভাঙ্গার বামনকান্দা রেলওয়ে জংশন থেকে ট্রেনটি ছেড়ে যায় এবং ট্রেনটি আবার ফিরে এসে আবার রূপদিয়া গিয়ে বিকাল ৫টা ৫০-এ ফিরে আসে। এর আগে গতকাল শনিবার সকালে একই সময়ে ও দুপুরে দুইটি ট্রেন পরীক্ষামূলকভাবে উচ্চগতিতে চালানো হয়।
[৪] ভাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনের পয়েন্টম্যান মো. নাঈম ইসলাম জানান, পাঁচটি বগি নিয়ে বিশেষ ওই ট্রায়াল ট্রেন ভাঙ্গা জংশন থেকে যশোরের রূপদিয়ার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে আবার ফিরে এসেছে। এ ট্রেনে যাত্রী হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ, চায়না ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরের কর্মকর্তারা।
[৫] রেল প্রকল্পের রেলপথের নির্মাণ কাজ শেষে ভাঙ্গা জংশন থেকে সরাসরি যশোরে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল করায় নতুন দ্বার উন্মোচন হতে চলেছে বলে মনে করছেন এই অঞ্চলের মানুষ। কম সময়ে অনেক পথ না ঘুরে সরাসরি উচ্চ গতির ট্রেনে চড়ে পণ্য ও যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু করবে খুব শীঘ্রই। যে কারণে এ অঞ্চলের মানুষের আরেকটি নতুন স্বপ্ন পুরণ হওয়ায় খুশি তারা।
[৬] ট্রেনের চালক মো: শাখওয়াত হোসেন জানান, সকাল পৌনে নয়টায় পাথরবোঝাই নিয়ে একটি মালবাহী ট্রেনে দুটি বগি নিয়ে যশোরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলাম। যশোর পৌচ্ছে সেখানে থেকে কিছু সময় পর আবার ভাঙ্গার উদ্দেশে রওনা দিই পরে আবার যাত্রীবাহী ৫টি কোচ নিয়ে যশোর যাই। এভাবে দুইদিন পরীক্ষামূলক যাওয়া আশা করেছি।
[৭] স্থানীয় বাসিন্দা মো: সোহাগ জানান, এখন ঢাকা-যশোর রেলপথ চালু হওয়ায় আমরা খুশি।এটা একটা নিরাপদ জার্নি। ভাঙ্গা থেকে বেনাপোল আগে অনেক ঘুরে যেতো হতো, এখন ভাঙ্গা থেকে বেনাপোল সরাসরি যাওয়া যাবে, সোজা রোড, সময় কম লাগবে।
[৮] রেলপথটি ঢাকার কমলাপুর থেকে শুরু হয়ে নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ এবং নড়াইলের ওপর দিয়ে যশোর গিয়ে শেষ হয়েছে। চলমান রেললিংক প্রকল্প শেষ হলে যশোর থেকে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টায় ঢাকায় যাওয়া সম্ভব হবে। আর দূরত্ব কমবে ১৯৩ কিলোমিটার। এতে পরিবেশবান্ধব ও অধিকতর নিরাপদ ট্রেন যাত্রায় মানুষের চলাচলের গতিতে নতুন মাত্রা যুক্ত হবে।
[৯] স্থানীয় অজয় কুমার জানান, এই ট্রায়্যালটি সম্পন্ন হওয়ার পর খুব শীঘ্রই ভাঙ্গা থেকে যশোর সরাসরি যেতে পারবো এত অনেক আনন্দ লাগছে। আমরা কম খরচে যশোর, বেনাপোল, খুলনা খুব কম সময়ে ও অল্প খরচে যাতায়াত করতে পারবো আবার যশোর থেকে বিভিন্ন পণ্য নিয়ে ভাঙ্গায় আসতে পারবো। আগে এই অঞ্চলের মানুষের যে স্বপ্ন ছিল সেই স্বপ্ন একে একে বাস্তবায়ন হয়েছে।
[১০] আজও ট্রায়্যাল ট্রেনের চালক ছিলেন মোঃ সাখাওয়াত হোসেন। পরীক্ষামূলক ট্রেন যাত্রায় সবকিছু পর্যবেক্ষণ করছেন সেনাবাহিনী ও রেল প্রকল্পে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ। নতুন রেললাইন চালু হওয়ার সংবাদে রেল লাইনের আশে-পাশের মানুষের মধ্যে চলছে উৎসবের আমেজ। এর মধ্যদিয়ে এই অঞ্চলের যাতায়াতের আরেকটি নতুন দ্বার উন্মোচিত হলো।সম্পাদনা: সমর চক্রবর্তী